আহ্ সারাদিন মাইয়া মাইনসের মত এত ঘ্যান ঘ্যান করো কেন?তোমার কি কোনো পৌরুষত্ব নাই?বার বার কেন আমাকে জ্বালাতন করো। একটা মানুষের কি সারাদিনই ফোনর কথা বলা লাগবে?এত কীসের কথা, এত কীসের প্রেম?আমাকে সারাদিন এত জ্বালাতন করবে না।সারাদিনে আমার অনেক কাজ।
সারাদিন কখন জ্বালাতন করলাম?এইতো গত তিন দিন পরে সহ্যের প্রাচীর ভেদ করে আজকে একটু ফোন দিয়েছি।তুমি তো ভীষণ ব্যাস্ত থাকো।তোমাকে পাওয়ার জো নাই।নেটে থাকো অথচ মেসেজের রিপ্লাই দাওনা,ফোন দিলে ওয়েটিং দেখায়...
অবন্তি:তুমি কি কোনোভাবে আমাকে সন্দেহ করছো?দেখো প্রণব সন্দেহ করলে আমার সাথে রিলেশন করার দরকার নেই।আমি তো আগেই বলেছি আমার সাথে কমিটমেন্টে গেলে আমাকে সন্দেহ করা যাবেনা।এতই যখন সন্দেহ তাহলে বারবার ফোন দাও কেন?রিলেশন রাখার কি দরকার?আর তুমি এমন মেয়েলি স্বভাবের কেন?তোমার কি লাজ লজ্জ্বা নাই?
আমি:পুরুষের কি ভালোবাসার দরকার পড়েনা?তারা কি কঠোর সূর্যের মতো চিরকালই নিয়ম নীতি মেনে দিনানিপাত করে?পুরুষের কি কখনো কোমল ছায়ার দরকার পড়েনা?
অবন্তি:জানিনা-
আমি:আচ্ছা আমি যদি কখনো সুপুরুষ হয়ে যাই!আর যদি প্রেম চেয়ে তোমার দুয়ারে হাত না পাতি?যেমন আচরণ তোমার ভাবনার সুপুরুষেরা করে, তেমন যদি আমিই তোমাকে উপেক্ষা করি,তোমার কি কিছু এসে-যাবে?তোমার কি মন খারাপ হবে?
অবন্তি:তুমি মন খারাপ করার মতো কেউ নও।
আমি:সত্যি বলেছো, আমি তোমার নিকট খুবই ফিকে একটা পদার্থ।তবুও আমাকে কখনো সুপুরুষ হতে দিওনা,প্রচন্ড সুপুরুষ।আমি একবার প্রচন্ড সুপুরুষ হলে তুমি হাজারবার মাথা ঠুকেও আমাকে পাবেনা।পাবেনা কোনো সমবেদনার সুর।পাবেনা মাথা লুকাবার একখানা কোমল বুক।তাই বলছি,আমাকে কখনো সুপুরুষ হতে দিওনা,প্রচন্ড সুপুরুষ।
অবন্তি:তোমার এসব বাজে প্রলাপ শোনার সময় নেই।এখন,রাখছি বাই-
আমি:আমি কিন্তু আবারো বলছি আমাকে সুপুরষ হতে দিওনা,প্রচন্ড.....
অবন্তি:টুট টুট টুট
আমাকে কোনোকিছু বলার সুযোগ না দিয়েই অবন্তি ফোনটা কেটে দিলো।আমাকে বলার সুযোগটুকুও দিলো না যে আমি কত কষ্টে আছি।যে মানুষ খেতে পায়না, লোকের দয়ায় বাঁচে তাকে ভিখারি বলে।আর যে মানুষ প্রেম পায়না, প্রেমের আশায়,সমবেদনার আশায় আকুল হয়ে ছোটে তাকে কি বলে?আচ্ছা মানুষ ভালোবাসা দেখলে ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখে নাকি ভালোবাসা ধরিতে তাদের ঘৃণা লাগে?ভালোবাসার রং কি কুৎসিৎ,স্বাদটা তোতো,ধরণটা কি বিবর্ণ।সেদিন আমার এত এত প্রশ্নের আদ্যোপান্ত কোনো উত্তরই পাইনি।জানাও ছিলনা, যে মেয়ে একসময় আমি বলতে পাগল ছিলো আমার সাথে সখ্যতা করতে যার এত প্রবল ইচ্ছা,সেই মেয়ের মনের ভাব বুঝে নিজে থেকে ভালোবাসি বলতেই কেন সবকিছু এত রসহীন হয়ে পড়লো?মুহুর্থকাল দেরি না করেই সে কেন এত ব্যাস্থ হতে লাগলো?
একবছর চারমাস পরে আজ হঠাৎ আমার বুকটা কেমন জানি ছ্যাৎ করে উঠলো।না আমাকে নরম হলে চলবে না।কারো কথায় নিজেকে গলে যেতে দিবো না আর।আমি এখন সুপুরুষ,প্রচন্ড সুপুরুষ।
অবন্তি:কেমন আছো প্রণব?
আমি:জানিনা
অবন্তি:কেন?
আমি:ভালো থাকা মনের ব্যাপার।এখন আর মনের খোঁজ রাখিনা।
অবন্তি: আর আমার?
আমি:একদমই না
অবন্তি: রাগ নাকি অভিমাণ?
আমি: নিজেকে বদলানোর তাগিদে।
অবন্তি: কয়েকদিন ধরে তোমাকে নক দিচ্ছি,অনলাইনে একটিভ থাকোনা কেন?
আমি: সবই বিরক্তিকর, তাই ত্যাগ করেছি।
অবন্তি:আর একবার সুযোগ দিবে
আমি: সুযোগ!কীসের?
অবন্তি: ধরে রাখার
আমি: না,একদমই না।
অবন্তি: প্লিজ, আরেকবার সুযোগ দাও।আমি জানি খুব বড় ভুল করেছি।তাইতো আজ ভালোবাসার মানুষটাকে পেয়েও হারিয়েছি।তুমি প্রেম দিয়েছিলে আমি দোষ খুঁজেছিলাম।তুমি আদর দিয়েছিলে আমি ব্যাক্তিত্বের খোটা দিয়েছিলাম।
আমি:আচ্ছা আমার একটু তাড়া আছে।
অবন্তি: কোথায় যাবে?
আমি: আনিস মামার চায়ের দোকানে,ক্যারাম খেলবো।
অবন্তি: আর আমি যে..... প্রণব দাড়াও দাড়াও প্রণব আমার কথা এখনো শেষ হয়নি।প্লিজ যেওনা-
আমি জানি অবন্তি এখন খুব কান্না করবে।আফসোসও করে নিশ্চই।একটা আকাশ হারানোর আফসোস।যে আকাশ ওকে ওড়বার জন্য ওর ভীতরে প্রাণ ভরে দিতো।শরিরে দিত মুক্ত বাতাসের প্রশান্তির ছোঁয়া।এমন আকাশকে সে পেয়েও আজ হারিয়েছে।হয়তো,কেউ তাকে ভাতের ছিটে দিয়ে ছলনায় ডেকেছিলো।কৃত্রিম চাহিদা মেটাতে পারেনি তাই হয়তো ছুঁড়ে দিয়েছে। অবন্তিকে আজ খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে ভালোবাসলে কেউ পৌরুষত্ব হারায় না।কেবল নিজেকে অগোছালো করে রাখে,গোছানো মানুষ প্রেমে পড়েনা।আজ খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে দেখো অবন্তি দেখো আজ আমি সুপুরুষ হয়েছি,প্রচন্ড সুপুরুষ।
অনুগল্প:সুপুরুষ,প্রচন্ড সুপুরুষ
🖊️ Sarker.P
Post a Comment