এক ব্যর্থ প্রেমিকের গল্প।

 



"আমি কি দেখতে খুব খারাপ,তাহমীদ ভাই?"

নয়নার হঠাৎ এমন প্রশ্নে খানিকটা হকচকালো তাহমীদ।নিজেকে স্বাভাবিক করে নয়নাকে জিজ্ঞাসা করল, 

" হঠাৎ এমন প্রশ্ন করলে কেন?"

নয়না মাথা নিচু করেই জবাব দিলো,

" এমনি জিজ্ঞেস করেছি।আপনি বলুন না যে আমি দেখতে কেমন?"

তাহমীদ চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলল,

" চা খাবে?"

নয়না জবাবে কিছু বললনা।তারমানে সে চা খাবে।তাহমীদ তার প্রশ্নের জবাব পেয়ে গেছে।সে জানে মেয়েটা মুখ ফুটে কোনো কথাই বলতে পারে না।কোনো কিছুর জবাব হ্যা হলেও চুপ করে থাকে।তাহমীদ চায়ের দোকানের ছোট ছেলেটার নাম ধরে ডাকল।মূহুর্তেই ছেলেটি সেখানে হাজির হলো।তার চকচকে দাতগুলো প্রকাশ করে বলল,"হ ভাই।কও।"

" একটা দুধ চা নিয়ে আয়।আর হ্যা চিনিটা একটু বেশি দিবি।কম যেন না হয়।"

ছেলেটা " আইচ্ছা ভাই" বলে চলে গেল।ছেলেটা সেখান থেকে চলে যেতেই তাহমীদ নয়নাকে বলল,

"এখানে বসো।"

তাহমীদের আস্তে বলা কথাতেও যেন মেয়েটা কেঁপে উঠল।তাহমীদ সেটা দেখল কিন্তু কিছু বলল না।কিছুক্ষনের মধ্যেই  সেখানে ছোট ছেলেটা চা দিয়ে গেল।এই পুরোটা সময়ই কেউ কোনো কথা বলল না।নিরবতা ভেঙে নয়না বলে উঠল," আপনি কিন্তু আমার প্রশ্নের জবাব দেননি, তাহমীদ ভাই।"

তাহমীদ এবারেও কিছু বলল না।নিজের চায়ের কাপটা বেঞ্চের ওপর রেখে নয়নার কাপটা হাতে নিয়ে তাতে ফু দিতে লাগল।চা টা ঠান্ডা হয়ে গেলে সেটা নয়নার হাতে ধরিয়ে দিয়ে নিজের কাপটা হাতে নিয়ে বলল,

" তোমার নাম তো নয়না।তাহলে আমি তোমায় সুনয়না বলে কেন ডাকি সেটা জানো?"

নয়না দুদিকে মাথা ঝাকালো।যার মানে সে জানে না।তাহমীদ হালকা হেসে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলল,

" তোমার চোখদুটো আমায় বড্ড জ্বালায় সুনয়না।যখনি আমার চোখদুটো বন্ধ করি তখনই তোমার চোখদুটো আমার বন্ধ চোখের সামনে ভেসে ওঠে।আর তুমি যখন আমার সামনে থাকো তখনও তোমার ওই চোখদুটো ছাড়া আর কোথাও আমার দৃষ্টি রাখতে ইচ্ছেই হয়না।এখন বলোতো আমি তোমার রুপের বর্ণনা কিকরে দেই? অবশ্য যার চোখদুটোই এত মায়াবি সে নারী কখনো অসুন্দর হতেই পারে না।"

তাহমীদের কথায় নয়না আবারো বোকার মতে প্রশ্ন করল,

" তারমানে আমি সুন্দর, তাহমীদ ভাই?"

নয়নার এহেন প্রশ্নে এবার তাহমীদ হেসে ফেলল।

" তুমি বড্ড বোকা সুনয়না।এবার চা টা খাও।"

নয়না চা টা একবার মুখে দিয়ে বলল,

" চায়ে চিনি কম দিয়েছে তাহমীদ ভাই।"

" সে কি।আমি এতবার করে বলার পরও কম দিলো।দাড়াও এক্ষুনি ওকে ডাকছি।"

নয়না তাহমীদকে থামিয়ে দিয়ে বলল,

" আপনিও তো চায়ে বেশি মিষ্টি খান।তো আমাকে আপনারটা দিন।"

তাহমীদ এবার ব্যাপারটা বুঝতে পারল যে নয়না আসলে তার চুমুক দেওয়া কাপ থেকে চা খেতে চাচ্ছে আর তাকে তার চুমুক দেওয়া কাপ থেকে খাওয়াতে চাচ্ছে। তবুও সে না বোঝার মতো করে বলল,

" তাহলে আমি কি খাব?"

" আপনি বরং আমারটা খেয়ে নিন।একদিন কম মিষ্টি দেওয়া চা খেতে নিশ্চয়ই আপনার অসুবিধা হবে না।"

তাহমীদ কিছু বলল না।তার কাপটা নয়নাকে দিয়ে নয়নার কাপটা নিজে নিল।

" এই কাপের চাতে মিষ্টি ঠিকঠাক আছে তো সুনয়না?"

" হু।এটাতে ঠিক আছে।"

" তাহলে তুমি যে বললে তোমার টাতে মিষ্টি কম হয়েছে।কিন্তু আমার তো বেশিই লাগছে।তাহলে কি তোমার ঠোটের ছোয়ায় চা টা মিষ্টি হয়ে গেল,সুনয়না?"

নয়না এবার বেশ লজ্জা পেল।তার সেই লজ্জা রাঙা মুখ দেখে তাহমীদ হো হো করে হেসে ফেলল।এরপর চলল কিছুক্ষণের নীরবতা।এবার সেই নীরবতা ভাঙল নয়নার ফোনের শব্দে।ফোনটা বের করে দেখল তার বান্ধবী রিমা ফোন করেছে।ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে তারাহুরা কন্ঠে রিমা প্রশ্ন করল,

" কী রে।তাহমীদ ভাইকে তোর মনের কথা বলেছিস?"

নয়না সে প্রশ্নের জবাব না দিয়ে " পরে কথা বলছি" বলে ফোনটা রেখে দিল। এবার নিজের মনকে সে স্থির করলো যে সে তাহমীদকে বলবেই যে সে তাকে ভালোবাসে।কিন্তু তার আগে তাহমীদই বলে উঠল,

" তোমায় পাত্রপক্ষ পরশু দেখতে আসছেনা সুনয়না?"

নয়না অবাক কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,

" আপনি জানেন? "

" হ্যা জানি তো।তোমার বিয়ে প্রায় ঠিকঠাক।তাহলে এবার আমাদের নয়নাও সংসার করবে হ্যা।এবার তাহলে আমাদের নয়নাও কারো বউ হবে।কারো হৃদয়ের রাণী হবে।?"

কথাটা বলেই তাহমীদ হাসতে লাগলো।যে হাসির কোনো অর্থ নেই।যেই হাসির পিছনে লুকিয়ে আছে কষ্ট যন্ত্রনা।চেয়েও যে তাহমীদ সেটা লুকোতে পারল না।নয়না এবার অশ্রুভরা নয়নে তাহমীদের দিকে তাকিয়ে বলল,

" আমি আপনার বউ হতে চাই,তাহমীদ ভাই।"

তাহমীদ একটু হাসলো।যে হাসির মাঝে ছিল অসহায়ত্ব। 

" সেটা যে সম্ভব না সুনয়না?"

নয়না উদ্বিগ্ন গলায় প্রশ্ন করল,

" কেন সম্ভব না তাহমীদ ভাই? আমি আপনাকে ভালোবাসি।আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন না তাহমীদ ভাই।"

" আমার যে ভালোবাসার অধিকার নেই সুনয়না।আমি যে চাইলেও তোমাকে আমার করতে পারবো না।"

" কেন পারবেন না।আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো তাহমীদ ভাই।"

তাহমীদ আবারো নিচের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল।হঠাৎ নয়না খেয়াল করল তার চোখ থেকে তার হাতের ওপর দু ফোটা জল পড়ল।

" আপনি কাদছেন তাহমীদ ভাই?"

নয়নার কথা শুনে তাহমীদ তরিঘরি করে তার চোখের জল মুছে বলল,

" আরে না না সুনয়না।আমি কাদব কেন।আসলে চোখে কি যেন পড়েছে।"

কথাটা বলে তাহমীদ নিজেই হেসে ফেলল।

" দেখেছো সুনয়না,আজ আমিও আমার চোখের জল লুকোতে তোমাকে একটা বাজে অজুহাত দেখালাম।"

" আপনি কি আমার জন্য কাদছেন তাহমীদ ভাই?"

নয়নার এ প্রশ্নের জবাব সে তাহমীদ এর থেকে পেল না।

" তুমি বাড়ি চলে যাও সুনয়না।সেখানে তোমার পরিবার আছে।যারা তোমাকে অনেকের থেকে বেশি ভালোবাসে।শোনো সুনয়না,কখনো নিজের পরিবারকে কষ্ট দিওনা।জানো তো,এই পৃথিবীতে যার পরিবার নেই তার থেকে হতভাগা হয়ত আর কেউ নেই।ঠিক তোমার তাহমীদ ভাই এর মতো।আর তাই তোমার তাহমীদ ভাই চায় না যে তার সুনয়নাও সেই একই কষ্ট পাক।তাই বলছি চলে যাও।আর তোমার এই হতভাগা তাহমীদ ভাই এর কাছে এসোনা।সে যে তোমাকে বিরহের যন্ত্রনা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারবে না।"

তাহমীদের এমন কথা শুনে নয়না আর সেখানে দাঁড়াতে পারলো না।অশ্রুভরা চোখ নিয়ে চলে আসল।আসার আগে শুধু একটা কথাই বলল,

" আপনি বড় নিষ্ঠুর তাহমীদ ভাই!"

তাহমীদ কিছু বলতে পারলো না।সে যে আসলেই বড়ো নিষ্ঠুর।নাহলে কি সে তার সুনয়নার হৃদয়টা এভাবে ভাঙতে পারত।কিন্তু সেও যে নিরুপায়।সে তো চেষ্টা করেছিল যেনো সে তার সুনয়নাকে সারাজীবন নিজের করে রাখতে পারে। কিন্তু সে যে ব্যর্থ।

----------------------

"আরে তাহমীদ যে।এত দেরি করলে কেন বাবা।মেহমানরা তো সবাই চলে গেল।তোমার সাথে তো কারোর আলাপই করাতে পারলাম না।"

" আরে চাচা আলাপ করার দিন কি শেষ হয়ে যাচ্ছে নাকি।এখন তো ওনারা আমাদের আত্মীয় হবেন।তা চাচা আমাদের সুনয়নার বিয়ে কবে ঠিক হলো।"

" এইতে বাবা চারদিন পর।"

এতক্ষনে তাহমীদের চোখ গেল দরজার কাছে দাড়ানো নয়নার দিকে।চোখদুটো ছলছল করছে।চোখেমুখে কী অসহায়ত্ব।তাহমীদ সেগুলো না বোঝার ভান করেই তার দিকে এগিয়ে গেল।

"সুনয়না শাড়ি পরেছো যে।তোমাকে কিন্তু শাড়িতে একদম নতুন বউ লাগছে।"

" থাক না তাহমীদ ভাই।ওকে আর কষ্ট নাই বা দিলেন!"

পাশ থেকে নয়নার বড় নোন নাদিয়া কথাটা বলল।

" আরে নাদিয়া যে। তা কখন এলে।কতদিন পর দেখলাম তোমাকে।"

নাদিয়া তাহমীদের এক হাত ধরে ঘরের ভিতরে নিয়ে যেতে যেতে নয়না কে বলল,

" তুই অন্য ঘরে যা।আমার তাহমীদ ভাই এর সাথে কথা আছে।"

নয়না কোন প্রতি উত্তর না করে সেখান থেকে চলে গেল। নাদিয়া ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে তাহমিদকে বিছানায় বসতে বলে নিজেও তার পাশে বসল।

" আপনি কেন করছেন এমনটা তাহমীদ ভাই।"

" আমি আবার কি করলাম নাদিয়া?"

" তাহমীদ ভাই আপনি কিন্তু আমার বোনের মতো বোকা নন।আপনি জানেন আমি কিসের কথা বলছি।তাও যদি আপনি না বোঝেন তাহলে আমিই বলছি।আমি জানি যে আপনিও নয়নাকে ভালোবাসেন।তাহলে ওকে বিয়ে করতে অসুবিধা কোথায় আপনার? আপনি কি ওর কষ্ট গুলো বুঝতে পারছেন না তাহমীদ ভাই?আমার বোনটা যে শেষ হয়ে যাচ্ছে সেটাও কি আপনি বুঝতে পারছেন না?"

কথাগুলো এক নাগারে বলে থামল নাদিয়া।সে এখন তাহমীদের উত্তর এর অপেক্ষায় আছে।কিন্তু তাহমীদ  নিরুত্তর। সে যেন কিছু শোনেই নি।নাদিয়ার এবার বেশ রাগ হলো।কিন্তু সে বুঝতে পারল যে এখন রাগলে হবে না।এখন মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে হবে।তাহমীদ ভাই নিশ্চয়ই কোনো কারণ ছাড়া এমনটা করছেন না।তার আবারো কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই তাহমীদই বলে উঠল,

" আমি গতপরশু চাচা মানে তোমার বাবার কেছে এসেছিলাম নাদিয়া।এটা বলতে যে আমি নয়নাকে ভালোবাসি। নয়নাও আমাকে ভালোবাসে।উনি যেন আমাকে একটু সময় দেন যাতে আমি একটা চাকরি খুজতে পারি।তারপর আমি নয়নাকে বিয়ে করে আমাদের একটা ছোট সংসার বানাবো।কিন্তু চাচা রাজি হননি।জানোতো নাদিয়া চাচা তার জায়গা থেকে একদমই ঠিক।কোন বাবা তার মেয়েকে আমার মতো বেকার ছেলের ভরসায় অপেক্ষায় রাখবে।যেখানে সে তার মেয়ের জন্য সরকারি চাকরি করা ছেলে পেয়েছে।কোন বাবা তার মেয়েকে এমন একটা ছেলের হাতে তুলে দেব যার কোনে চালচুলো নেই।যার বিপদের দিনে আশ্রয়ের কোনো জায়গা নেই।যার সুখগুলো ভাগ করে নেওয়ার মতো কোনে মানুষ নেই।জানোতে তারপরও আমি চাচাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম।"

কথাটা বলে একটু থামল তাহমীদ।

" তারপর বাবা কি বলল তাহমীদ ভাই?"

" চাচা বলল যে আমি নাকি অকৃতজ্ঞ, বেইমান।আমি নাকি যে থালে খেয়েছি সেই থালেই ফুটো করেছি।আমি নাকি স্বার্থপর। যে চাচা আমাকে বাবার মতো আগলে রেখেছে আমি নাকি তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি।আমি নাকি তার ভালোবাসার মূল্য দিতে পারিনি।এখন তুমিই বলো নাদিয়া এরপর আর আমার কি করার থাকে।আমি যে সত্যিই চাচার কাছে অনেক ঋণী। আমি কিভাকে তাকে অপমান করি।উনিই যে প্রথম আমার মাথায় পিতার মতো স্নেহের হাতটা রেখেছিলেন।আমি যে তাকে কষ্ট দিতে পারবনা নাদিয়া।"

" আপনি পালিয়ে যান নয়নাকে নিয়ে তাহমীদ ভাই!"

" তা হয়না নাদিয়া।"

" কেন হয়না তাহমীদ ভাই?"

" আমি আজ পরিবার ছাড়া যে কষ্ট পাচ্ছি তুমি কি চাও যে তোমার বোনও সেই একই কষ্ট পাক? চাওনা তো।তাহলে আর এই কথা বলবেনা নাদিয়া।আমি চাচার বিশ্বাস ভাঙতে পারবো না নাদিয়া।এতকিছুর পরেও যে চাচা আমাকে তার পরিবারের একজান বলে পরিচয় দিয়েছে এটাই আমার জন্য অনেক।তুমি ভালো থেকো নাদিয়া।আজ আমি আসি।আর হ্যা আমার সুনয়নাকে যেন এসব বলোনা।ও যদি জানতে পারে যে ওর বাবাকে দেওয়া কথার কারণে ওর তাহমীদ ভাই ওর কথা রাখতে পারলো না তাহলে ও খুব কষ্ট পাবে।তারথেকে বরং আমিই ওর ঘৃণা হয়ে থেকে যাবো সারাজীবন।তাও ওর জীবনের কোনো একটা অংশে তো আমার জায়গা হবে।এটাই অনেক।"

------------------------

 নয়না,

আজ আর তোমাকে সুনয়না বলে ডাকলাম না।সেই অধিকার যে এখন অন্য কারো।সেসব কথা এখন বাদ দেই।ভেবেছিলাম তোমায় কখনো জানাবো না।কিন্তু তোমার তো এটা জানার অধিকার আছে যে তোমাকে একজন ভালোবাসে।আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবেসে নিঃস্ব হয়ে গেছে।কিন্তু জানো তোমাকে ভালোবেসে এই আমি নিঃস্ব থেকে হয়েছি পূর্ণ।আমার যে জীবনে বেঁচে থাকার কোনো অবলম্বন ছিলোনা আজ সেই জীবনে তোমার ভালোবাসাই আমায় বাচিয়ে রাখবে নয়না।বেশি কথা বাড়াবো না।শুধু এতটুকু জেনে রেখ তোমার তাহমীদ ভাই তোমায় খুব ভালোবাসে।যতটা সে নিজেকেও বাসেনা।আমি তোমাকে ততটুকু ভালোবাসি যতটুকু ভালোবাসলে আর ভালোবাসা যায় না।আমি তোমাকে ততটুকু ভালোবাসি যতটুকু ভালোবাসলে আর কখনো কাওকে নতুন করে ভালোবাসা যায় না।কিন্তু আমি ব্যর্থ।আমি পারিনি তোমাকে আগলে রাখতে।তোমার কাছে একটা অনুরোধ নয়না,জানি তোমার ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার এখন অন্য কারে।তাই আমাকে নাহয় তুমি তোমার ঘৃণাতেই রাখলে।তাওতো তোমার জীবনে একটু জায়গা পাবো।

ভালো থেকো নয়না।

ইতি

তোমার ব্যর্থ প্রেমিক

---------------------------------------

নয়নার বিয়ের দশ বছর পার হয়েছে।এই দশ বছরে একটা দিনও এমন যায়নি যেই দিন নয়না তার তাহমীদ ভাইএর দেওয়া এই শেষ চিঠিটা পড়েনি।এই দশ বছরে মানুষটার খবর কেউ জানে না।সেই যে নয়নার বিয়ের দিন তাদের শেষ দেখা হয়েছিলো।তারপর আর মানুষটার খোজ কেউ পায়নি।নয়না চিঠিটা পড়ে৷ আবারো সেটা ভাজ করে যত্নে সেটা আলমারিতে রেখে দিল।জানালার কাছে দাড়িয়ে চোখদুটো বন্ধ করল।

" আমি পারিনি তাহমীদ ভাই।আমি পারিনি আপনাকে আমার ঘৃণায় রাখতে।আপনি যে আমার প্রথম ভালোবাসা।কিন্তু আফসোস আমার শেষ ভালোবাসাতে আপনাকে রাখতে পারলাম না।মানুষটা যে আমাকে তাকে ভালোবাসতে বাধ্য করলো।কিন্তু মাঝেমধ্যে ভাবি,দুটো মানুষকে কি একসাথে ভালোবাসা যায়! তাহলে কি আমি শুধু আপনাকেই ভালোবাসি।ওনার প্রতি কি শুধুই আমার দায়বদ্ধতা। জানিনা। আপনি আমাকে যে সুখের জন্য ছেড়ে গেছিলেন উনি আমাকে সেই সুখ দিয়েছে।কিন্তু আপনি হয়তো বুঝতে পারেননি যে যে সুখে আপনার অস্তিত্ব নেই সেই সুখ আমার কাছে বিষের থেকেও ভয়ংকর তাহমীদ ভাই।কিন্তু আফসোস আপনি সেটা বুঝলেননা।"

আরো গল্প পড়ুন

অনুগল্প 

এক ব্যর্থ প্রেমিকের গল্প 

লেখনিতে:খুশবু আকতার

Post a Comment

Previous Post Next Post